আব্দুস সালাম,টেকনাফ :
অবশেষে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে দু’টি জাহাজ রওয়ানা করেছে । শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) পৌঁনে ১০টার দিকে ৬১০ জন যাত্রী নিয়ে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস নামে জাহাজ দু’টি যাত্রা শুরু করে।
জানা যায়,গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত দেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।
জেলা প্রশাসক জানান, বুধবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, দপ্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়, তারই আলোকে শুক্রবার সকাল থেকে দুটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয় এবং শনিবার থেকে লাইসেন্স ও ফিটনেস আছে- এমন সকল জাহাজ চলবে বলে জানান।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, এ ক্ষেত্রে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে তা না মানলে জাহাজ চলাচলের অনুমতি বাতিল করা হবে।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না। জাহাজে পর্যাপ্ত ঝুড়ি রাখতে হবে, যাতে চিপস বা কোন পলিথিন ও প্লাস্টিক সাগরে না ফেলে এবং প্রতিটি জাহাজে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক প্লেকার্ড দিতে হবে। সেন্টমার্টিনদ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য জাহাজে করে টেকনাফে নিয়ে আসতে সাহায্য করতে হবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য যাতে ধ্বংস না হয় এ বিষয়ে সচেতন করতে জাহাজে প্রচারণা চালাতে হবে। এরকম আরো কয়েকটি অবশ্যই পালনীয় শর্ত সাপেক্ষে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। যার ব্যত্যয় ঘটলে অনুমতি বাতিল করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমদ জানান, ‘চলতি পর্যটন মৌসুমে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সকাল এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস নামের দুটি জাহাজ ৬১০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আগামীকাল শনিবার থেকে অন্যান্য জাহাজ গুলো চলাচল করবে।’
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল জানান, ‘পর্যটন মৌসুমের আর মাত্র দুই মাস বাকি আছে। এই দুই মাসে আমরা পর্যকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করে আনন্দ দিতে ই। টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে অনেক শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। অনেক অস্বচ্ছল লোকজনও সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে চায়। জাহাজ মালিকদের আমরা অনুরোধ করবো যারা অক্ষম তাদের টিকিটমূল্য বিবেচনা করতে। সর্বোপরি আমরা আশা রাখছি, পর্যটকরা নিরাপদে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান জানান,আজ সকালে দু’টি জাহাজ টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। তবে জাহাজে যাত্রী ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ছিল না।
উল্লেখ্য,নাফনদী নাব্যতা সংকট ও মিয়ানমারে চলমান সংঘর্ষের কারণ দেখিয়ে চলতি পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে প্রশাসন। এ কারণে টেকনাফ থেকে কোনও জাহাজ এতদিন সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচল করেনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।